বায়ুদূষণ ও হাঁপানি – times-bd24.com
বায়ুদূষণ ও হাঁপানি – times-bd24.com
বায়ুদূষণ যেন আমাদের নগরজীবনের একটি স্থায়ী সমস্যার নাম। বিশ্বে বায়ুদূষণে রাজধানী শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকা। বায়ুতে সাধারণত ২১ শতাংশ অক্সিজেন, ৭৮ শতাংশ নাইট্রোজেন, দশমিক ৩১ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং নির্দিষ্ট অনুপাতে ওজোন, হাইড্রোজেন ইত্যাদি থাকে। যদি কোনো কারণে বাতাসে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়ে অন্যান্য গ্যাসের ঘনত্ব বেড়ে যায় কিংবা বালুকণার হার বেড়ে যায়, তবে সেটি দূষিত হয়ে যায়। মারাত্মক বায়ুদূষণের কারণে ঢাকা শহরের মানুষ প্রতিনিয়ত অ্যাজমা (হাঁপানি), ক্রনিক অবসট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) ও ফুসফুসের ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
হাঁপানি ফুসফুসের একটি প্রদাহজনিত অবস্থা। এতে কিছু উদ্দীপক প্রদাহ সাময়িকভাবে শ্বাসনালি সরু করে দেয়। এ কারণে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ধুলাবালু মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসযন্ত্রে ঢুকে শ্বাসকষ্টের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। দূষিত বায়ু ফুসফুসে ঢোকার পর সেখানে ফ্রি রেডিক্যালের সৃষ্টি হতে পারে। দেখা গেছে শ্বাসতন্ত্রের অসুখ সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এসব ফ্রি র্যাডিক্যাল। হাঁপানি বংশগতভাবেও হয়ে থাকে।
শহরাঞ্চলে হাঁপানি বৃদ্ধির মূল কারণ ঘনবসতি। শহরে একসঙ্গে অনেক মানুষ বসবাস করেন। এতে ঘরের ভেতরের পরিবেশ স্যাঁতসেঁতে ও অস্বাস্থ্যকর হয়। ঘরের আসবাবে জমে থাকা ধুলা এবং ধুলায় ‘ডাস্ট মাইট’ নামের এক প্রকার কীট বেশি তৈরি হয়, যা হাঁপানি অনেক মাত্রায় বৃদ্ধি করে। গ্রামের পরিবেশ খোলামেলা হওয়ায় এই সমস্যা তুলনামূলক কম হয়।
বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস গাড়ি, শিল্পাঞ্চল, ইটভাটা ও নাগরিক বর্জ্য। রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) চালিত যানবাহন থেকে বের হয় ক্ষতিকারক বেনজিন। এ ছাড়া সালফার ও সিসাযুক্ত পেট্রল, জ্বালানি তেলে ভেজাল ও ত্রুটিপূর্ণ ইঞ্জিনের কারণে গাড়ির ধোঁয়ার সঙ্গে কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, অ্যালডিহাইডসহ সিসার নিঃসরণ বাতাসকে দূষিত করে। উন্মুক্ত স্থানে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত বালু-সিমেন্ট ফেলে রাখা, বিশাল এলাকাজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি দীর্ঘদিন ধরে চললে চারদিকে প্রকট ধুলাদূষণ সৃষ্টি করে।